বর্তমান সরকার মানুষের ভাত-কাপড়ের নিরাপত্তা দিতে পারছে না। প্রেসের ফ্রিডম, জনগণের সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকারের চাহিদা পূরণ করতেও এই সরকার ব্যর্থ। আগামী সংসদ ও স্থানীয় সব নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশগ্রহণ করছে, কারণ বর্তমান সরকার নির্বাচনে কীভাবে কারচুপি করে ভোট দেয়, তা দেখানোর জন্য।
তিনি বলেন, বর্তমানে বিদেশি প্রেশার কাজ করছে। আমরা তাকিয়ে আছি, অন্য রাজনৈতিক দলগুলো চেষ্টা করছে। এই রকম সুযোগে সবাই যদি মিলেমিশে কিছু করতে পারে, তাহলে দেশের মানুষ উদ্ধার হবে। এ অবস্থা চলতে থাকলে সামনের দিকে দেশের মানুষের হাতে রাজনীতি থাকবে না। রাজনৈতিক দলও থাকবে না। যদি এইভাবে নির্বাচন হয় এবং বর্তমান সরকারই ক্ষমতায় আসে, তাহলে এটাই বাস্তবায়ন হবে। এজন্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন জাতির জন্য বড় ধরনের একটা পরীক্ষা। মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টায় রংপুর সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে সেখানে তাকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে দেশের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে জিএম কাদের সাংবাদিকদের বলেন, মানুষের কোনোরকম অধিকার নেই বললেই চলে। মানুষের ভোটাধিকার নেই, কথা বলার অধিকার নেই। প্রেস ফ্রিডম অর্থাৎ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই। মানুষের ভাত-কাপড়ের নিরাপত্তা নেই। সংবিধান অনুযারী মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা সরকারের এবং রাষ্ট্রের দায়িত্ব, সেগুলোর ব্যাপারে কোনো ধরনের ব্যবস্থা করা হয়নি। দেশের মানুষকে যে কোনোভাবেই হোক মুক্ত করতে হবে। বর্তমান বাজেট জনমুখী হয়নি দাবি করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, বাজেটের পর সাধারণ মানুষের দুরবস্থা বাড়বে। অর্থনৈতিক মন্দা চলছে, এটা আরও বাড়বে। দেশের মানুষ একটা অজানা অনিশ্চিত বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন গতি, অন্যদিকে প্রতিদিন মানুষের আয় কমছে। কিন্তু বাজেটে সরকার এ বিষয়ে কোনোরকম পদক্ষেপ নেয়নি। মানুষকে বাঁচাতে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার কথা, সরকার তা দেয়নি। যতটুকু দিয়েছে, তা যৎসামান্য। এর মধ্যে পেনশনের টাকার কথা বলে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে।
এর আগে পাঁচ দিনের সফরে ঢাকা থেকে দুপুরে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান জিএম কাদের। সেখান থেকে সড়কপথে রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছালে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান নেতাকর্মীরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও রংপুর মহানগর সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির, রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব হাজি আব্দুর রাজ্জাক, মহানগরের সহসভাপতি লোকমান হোসেন, জাহেদুল ইসলাম প্রমুখ।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের রংপুরে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করবেন। ঈদের তৃতীয় দিনে (১ জুলাই) তার নির্বাচনি এলাকা লালমনিরহাটে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। পরদিন (২ জুলাই) তিনি রংপুর হয়ে ঢাকায় ফিরে যাবেন।